Uploaded by Hasib Rahman

chem-11-3(1)

advertisement
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
আল্লাহ্‌সর্বশক্তিমান
বিষয়ঃ রসায়ন অধ্যায়ঃ জীবাশ্ম জ্বালানি(১১)
জীবাশ্ম : বহু প্রাচীনকালের উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃতদেহের যে ধ্বংসাবশেষ মাটির নিচে পাওয়া যায় তাকে জীবাশ্ম বলে
জীবাশ্ম জ্বালানি:মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী ২০০ মিলিয়ন বা তারচেয়ে বেশি বছর মাটির নিচে থেকে উচ্চ তাপ ও চাপে কয়লা, প্রাকৃ তিক গ্যাস বা খনিজ
তেলে পরিণত হয় , এগুলোকে জীবাশ্ম জালানি বলে।
বড় বড় উদ্ভিদ থেকে কয়লা আর ফাইটোপ্লাংকটন, জুওপ্লাংকটন ও মৃত প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে পেট্রোলিয়ামের সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিবর্ত ন
অব্যাহত থাকায় পেট্রোলিয়াম টি আরও পরিবর্তি ত হয়ে প্রাকৃ তিক গ্যাস সৃষ্টি হয়। তাই কোথাও কোথাও পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃ তিক টিক গ্যাস
এক সাথেই থাকে। যেমন: বংলাদেশের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে প্রাকৃ তিক গ্যাসের সাথে পেট্রোলিয়ামও পাওয়া গেছে। এই জীবাশ্ম জ্বালানির মূল উৎস
জীবদেহ, তাই এ সকল জ্বালানির মূল উপাদান কার্বন ও কার্বনের যৌগ।
পলিমার (Polymer) : যে বিক্রিয়ায় কোনাে পদার্থের অনেকগুলাে ক্ষু দ্র অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে বৃহৎ অণু গঠন করে সেই বিক্রিয়াকে পলিমারকরণ
বিক্রিয়া (Polymerization Reaction) বলে।
পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় যে ছােট অণুগুলাে অংশগ্রহণ করে তাদের প্রত্যেকটিকে এক একটি মনােমার বলে এবং বিক্রিয়ার ফলে যে বৃহৎ অণু পঠিত
হয় তাকে পলিমার অণু বলে। দুইটি মনােমার একসাথে যুক্ত হলে তাকে বলে ডাইমার (dimer), তিনটি মনােমার একসাথে যুক্ত হয়ে হয় ট্রাইমার
(trimer)। এভাবে অনেকগুলাে মনেমার এক সাথে যুক্ত হয়ে পলিমারের সৃষ্টি হয়। আমাদের খাদ্যের একটি প্রধান উপাদান প্রােটিন। এই প্রােটিনও
অ্যামাইনাে এসিডের একটি পলিমার। A-A-A-A-A- পলিমার হলে মনোমারA আর পলিমার A-B-A-B-A-B-A-B- হলে মনোমার A-B
শ্রেণীবিভাগ:
মনোমার এর কার্যকরী মূলকের ভিত্তিতে বা গঠন প্রকৃ তি অনুসারে পলিমার সমূহকে প্রধানত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায় ১.যুত পলিমার ২.
ঘনীভবন পলিমার
১. যুত পলিমারঃযে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনােমার অণুগুলাে সরাসরি একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে দীর্থ শিকলবিশিষ্ট পলিমার গঠন করে
তাকে সংযােজন পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলা হয় । যেমন পলিথিন, পলিপ্রোপিন ,পলিস্টারিন, বেনজিন, পিভিসি ইত্যাদি
পলিথিনঃ সামান্য পরিমাণে অক্সিজেনের উপস্থিতিতে 1000 বায়ুমণ্ডল চাপে ও 200 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ইথিন কে উত্তপ্ত করলে পলিথিন
উৎপন্ন হয় ।
বৈশিষ্ট্য: পলিথিন নমনীয় কিন্তু শক্ত প্রকৃ তির প্লাস্টিক পদার্থ ।সহজে কাটা যায় না,টেকসই । এটা এসিড ক্ষার ও বিভিন্ন দ্রাবক দ্বারা আক্রান্ত হয়
না । এটা উত্তম তড়িৎ অন্তরক
পলিথিন এর ব্যবহারঃ পলিথিন প্রধানত ওষুধ পত্রাদি এর প্যাকেট করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত বালতি ,টেবিল ক্লথ ,
ডাস্টবিন , পানির ট্যাংক প্রভৃ তি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। অন্তর রূপে ও বিভিন্ন প্রকারের বোতল তৈরিতে পলিথিনের ব্যবহার আছে।প্লাস্টিক ব্যাগ
ও প্লাস্টিক সীট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়
পলিপ্রোপিনঃ টাইটানিয়াম ক্লোরাইড এর উপস্থিতিতে 140 এটিএম চাপে ও 120 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিপ্রোপিন উৎপন্ন
হয়
বৈশিষ্ট্যঃ পলিপ্রোপিন হল সবচেয়ে হালকা প্লাস্টিক পলিমার। সহজে কাটা যায় না , টেকসই
ব্যবহারঃ পলিপ্রোপিন এর বিশেষ প্রকারের ব্যবহারের মধ্যে মোটা রজ্জু বা রোপ , কার্পেট প্রভৃ তি প্রস্তুতির জন্য কৃ ত্রিম সুতা তৈরি উল্লেখযোগ্য
।প্লাস্টিক রসি , প্লাস্টিক বোতল , দড়ি , পাইপ প্রভৃ তি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়
পলিভিনাইল ক্লোরাইড বা পিভিসিঃ ভিনাইল ক্লোরাইড কে জৈব পার অক্সাইড এর উপস্থিতিতে উচ্চচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে
পলিভিনাইল ক্লোরাইড বা পিভিসি উৎপন্ন হয়
বৈশিষ্ট্যঃশক্ত , কঠিন এবং পলিথিন এর তু লনায় কম নমনীয়
ব্যবহারঃ কৃ ত্রিম চামড়া তৈরিতে , ঘরের মেঝের কার্পেট প্রস্তুতিতে , ঘরের ছাদ তৈরির জিনিসপত্র তৈরিতে ,প্লাস্টিক সিরিঞ্জ, রেইনকোট,
গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরীর জন্য পলিভিনাইল ক্লোরাইড ব্যবহৃত হয়
পলিস্টাইরিনঃ শুষ্ক অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড প্রভাবকের উপস্থিতিতে বেনজিনের সাথে ইথিলিন এর বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ইথাইলবেনজিনকে 650
ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফেরিক অক্সাইড বা ক্রোমিয়াম অক্সাইড প্রভাবক এর উপর দিয়ে চালনা করলে 𝐻 2 অপসারিত হয়ে স্ট্যারিন
উৎপন্ন হয় । স্ট্যারিন থেকে উচ্চচাপ সংযোজন পলিমারকরণ প্রক্রিয়ায় পলিস্টাইরিন প্রস্তুত করা হয়
ব্যবহার ঃপলিস্টাইরিন দ্বারা খাবার পাত্র , কসমেটিকের বোতল , টেলিভিশন ক্যাবিনেট , প্লাস্টিক কাপ , শিশুদের খেলনার জিনিস ও
প্যাকেজিং এর জিনিস তৈরি করা হয়
টেফনলঃ ক্লোরো ডাইক্লোরো মিথেন থেকে 900 ডিগ্রী সেলসিয়াস এ উৎপন্ন টেট্রাফ্লোরো ইথিলিন এর পলিমারকরণ প্রক্রিয়ায় টেফনল বা
পলিটেট্রাফ্লোর ইথিলিন প্রস্তুত করা হয় । প্রভাবক রূপে ফেরাস সালফেট ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ব্যবহৃত হয়
বৈশিষ্ট্যঃ ক্লোরো কার্বন হিসেবে এটি খুবই নিষ্ক্রিয় রাজ্য এবং এসিড ক্ষার ও জারক পদার্থের সাথে ক্রিয়াহীন বিদ্যুৎ ও তাপ অপরিবাহী এবং
অত্যন্ত শক্ত ।
ব্যবহার ঃরান্নার প্যান এর ওপর টেফনল এর ননস্টিক আবরণ বা কাটিং দেয়া হয় । এছাড়া বিদ্যুৎ যন্ত্রপাতিতে অন্তরক বা ইনসুলেটররূপে,
জাহাজের রজ্জু,ভালব প্রভৃ তি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়
ঘনীভবন পলিমার (condensation Polymer): যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনােমার অণুসমূহ পরস্পরের সাথে যুক্ত হবার সময় ক্ষু দ্র ক্ষু দ্র
অণু যেমন: H,0, Co, ইত্যাদি অপসারণ করে সেই পলিমারকরণ বিক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলা হয়। ঘনীভবন পলিমারকরণ
বিক্রিয়ায় নাইলন 6 : 6 পলিমার তৈরি হয়।
সংযোজন পলিমারকরণ ও ঘনীভবন পলিমারকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য ঃ
সংযোজন বা যুত পলিমার
ঘনীভবন পলিমার
যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনােমার অণুগুলাে সরাসরি একে
অপরের সাথে যুক্ত হয়ে দীর্থ শিকলবিশিষ্ট পলিমার গঠন করে তাকে
সংযােজন পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলা হয়
যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনােমার অণুসমূহ পরস্পরের সাথে যুক্ত
হবার সময় ক্ষু দ্র ক্ষু দ্র অণু যেমন: H,0, Co, ইত্যাদি অপসারণ করে
সেই পলিমারকরণ বিক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলা
হয়
পলিমারের আণবিক ভর মনোমার এর আণবিক ভর এর সরল
গুণিতক হয়
পলিমারের আণবিক ভর কখনো মনোমার এর আণবিক ভর এর
সরল গুণিতক হয় না
সংযোজন পলিমারকরনে একটিমাত্র কার্বন কার্বন বন্ধন যুক্ত
মনোমার থাকে
ঘনীভবন পলিমারকরণে দুটি ভিন্ন কার্যকারী মুলক যুক্ত মনোমার
থাকে
উদাহরণ: পলিথিন , পিভিসি , পলিভিনাইল ক্লোরাইড
উদাহরণ: নাইলন 6:6
উৎসের উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস: উৎসের ভিত্তিতে পলিমার সমূহকে প্রধানত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়
1. প্রাকৃ তিক পলিমারঃ এই ধরনের পলিমারগুলাে উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে পাওয়া যায়। উদাহরণ হল— প্রােটন, সেলুলােজ,স্টার্চ , গ্লাইকোজেন
নিউক্লিক অ্যাসিড , রাবার ইত্যাদি
2. অর্ধ-কৃ ত্রিম পলিমারঃপ্রকৃ তিজাত পলিমার থেকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে নতু ন পলিমার তৈরি করা হলে তাকে অর্ধ কৃ ত্রিম পলিমার বলে।
যেমনঃ সেলুলোজ থেকে সেলুলোজ অ্যাসিটেট, সেলুলোজ নাইট্রেট এবং প্রাকৃ তিক রাবার থেকে হ্যালোজেনেটেড প্রাকৃ তিক রাবার তৈরি করা হয় ।
3. কৃ ত্রিম পলিমারঃ পরীক্ষাগারে ও শিল্প ক্ষেত্রে রাসায়নিক পদার্থ থেকে কৃ ত্রিম পলিমার তৈরি করা হয় । যেমনঃনাইলন,টেরিলিন, পলিথিন,
পলিস্টারিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড ইত্যাদি
প্লাস্টিসিটিঃ কোন কঠিন পলিমার যে ধর্ম গুনে উচ্চ তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় প্রবাহ ধর্ম লাভ করে এবং একে পুনঃ পুনঃ বিগলিত অবস্থায়
বিভিন্ন আকার ও আকৃ তিতে মন্ড করা যায় পলিমারের সে ধর্মকে পলিমারের প্লাস্টিসিটি বলে । প্লাস্টিসিটি ধর্মের উপর ভিত্তি করে পলিমার সমূহ
২ শ্রেণীতে বিভক্ত ১।থার্মোপ্লাস্টিক ও ২।থার্মোসেটিং
থার্মোপ্লাস্টিকঃ যেসব পলিমারে ক্রসলিনক কম থাকে সেসব পলিমার থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার অবস্থা লাভ করে, এ অবস্থায় উচ্চ তাপমাত্রায় গলিত
তরলে প্রবাহ ধর্ম থাকে । থার্মোপ্লাস্টিক গুলো তাপ প্রয়োগে নরম ও গলে যায় এবং শীতল করলে পুনরায় পূর্বের মতো কঠিন হয় । এ প্রক্রিয়া পুনঃ
পুনঃ করা যায় ।এরা গঠনে মূলত সরল শিকল পলিমার। যেমনঃ পলিথিন পলিস্টারিন প্লাস্টিক
থার্মোসেট প্লাস্টিকঃ যেসব পলিমারে ক্রসলিনক বেশি থাকে, তখন এরা থার্মোপ্লাস্টিক পলিমারের পরিণত হয় এ অবস্থায় উচ্চ তাপমাত্রায় তরল
প্রবাহ ধর্ম থাকে না কারণ পলিমাটি একক জালিকা বিন্যাস লাভ করে। থার্মোসেটিং প্লাস্টিক গুলো প্রস্তুতকালে প্রথমবারের মতো তরল থেকে
শীতল করে কঠিন করা হয় পুনরায় গলানো যায় না এরা গঠনে ক্রসলিনক জটিল পলিমার। যেমনঃ ব্যাকেলাইট, মেলামাইন পলিমার ইত্যাদি
থার্মোসেটিং ও থার্মোপ্লাস্টিক পলিমারের মধ্যে পার্থক্য
থার্মোসেটিং পলিমার
থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার
যেসব প্লাস্টিক কে তাপ দিয়ে বারবার গলানো যায় এবং বিভিন্ন
আকৃ তি দেওয়া যায় তাকে থার্মোপ্লাস্টিক বলে
যেসব প্লাস্টিক কেতাব দিয়ে মাত্র একবার গলানো যায় এবং আকৃ তি
দেওয়া যায় তাকে থার্মোসেটিং পলিমার বলে
থার্মোপ্লাস্টিক কে সম্প্রসারিত বাঁকানো ও তাপে গলানো যায়
তাপ দিলে এ প্লাস্টিক কয়লায় পরিণত হয়
থার্মোপ্লাস্টিক এ কার্বন সমূহের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন থাকে
থার্মোসেটিং প্লাস্টিক কার্বন সমূহের মধ্যে দুর্বল সমযোজী ও
হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে
উদাহরণঃ প্লাস্টিকের মগ, বালতি , চেয়ার , টেবিল ইত্যাদি
যেমনঃবৈদ্যুতিক সুইচ
LDPE(Low-density polyethylene বা নিম্ন ঘনত্বের পলিথিন) ও HDPE(High-density polyethylene বা উচ্চ ঘনত্বের পলিথিন)
এর পার্থক্যঃ
LDPE
HDPE
এর ঘনত্ব কম
এর ঘনত্ব বেশি
এটি কম শক্তিশালী
এটি বেশি শক্তিশালী
কম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে
বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে
এর পলিমার চেইনে HDPE থেকে বেশি শাখা থাকে
এর পলিমার চেইনে কম শাখা থাকে
উচ্চ স্থিতিস্থাপক গুণ রয়েছে
কম স্থিতিস্থাপক গুণ রয়েছে
অস্বচ্ছ ও স্বচ্ছ উভয়ই হতে পারে
সাধারণত অস্বচ্ছ হয়
জৈব রসায়নঃ রসায়ন বিদ্যার যে শাখায় হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বনের জাতকসমূহের গঠন , প্রস্তুতি , ধর্ম , সনাক্তকরণ প্রভৃ তি বিষয় নিয়ে
আলােচনা করা হয় তাকে জৈব রসায়ন বলে।
“অহঙ্কারবশে তু মি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো উদ্ধত, অহঙ্কারীকে
পছন্দ করেন না।” (আল-কুরআন, ৩১:১৮)
জৈব যৌগঃ কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন ও এদের থেকে উদ্ভু ত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ বলে। যেমন-মিথেন
(CH4),মিথানল (CH3OH), মিথাইলঅ্যামিন (CH3NH2) ইত্যাদি জৈব যৌগ।
প্রাণশক্তি মতবাদঃ 1815 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বার্জে লিয়াস প্রস্তাব করেন যে , জৈব যৌগ সমূহ কেবল উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহে এক রহস্যময় প্রাণ শক্তির
প্রভাবে উৎপন্ন হয় । তাই পরীক্ষাগারে জৈব যৌগ সমূহ প্রস্তুত করা সম্ভব নয় । এ মতবাদ বার্জে লিয়াস এর প্রাণশক্তি মতবাদ নামে অভিহিত হয় ।
তখন সব বিজ্ঞানী এই মতবাদ গ্রহণ করেন।
কিন্তু 1828 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক ভোলার [Fredrich Whohler] সর্বপ্রথম অজৈব যৌগ অ্যামোনিয়াম সায়ানেট (ammonium
cyanate) [NH4CNO] -কে উত্তপ্ত করে জৈব যৌগ ইউরিয়া (Urea) [CO(NH2)2] প্রস্তুত করে দেখান যে, পরীক্ষাগারে জৈব যৌগ তৈরি করা
যায় . ইউরিয়া একটি জৈব পদার্থ, যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর মুত্রের মধ্যে পাওয়া যায় ।
NH4CNO [অ্যামোনিয়াম সায়ানেট] → CO(NH2)2 [ইউরিয়া]
তাই বলা যেতে পারে যে, বিজ্ঞানী ভোলারই আধুনিক জৈব রসায়নের জনক
জৈব যৌগের শ্রেণীবিভাগঃ
কার্বন শিকলের কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে জৈব যৌগ সমূহ কে প্রধানত দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়।
১.মুক্ত শিকল জৈব যৌগ ও ২.বদ্ধ শিকল জৈব যৌগ
১. মুক্ত শিকল জৈব যৌগঃ এসব জৈব যৌগে কার্বন শিকলের দুপ্রান্ত পরস্পর যুক্ত হয় না। এ জাতীয় জৈব যৌগ কে অ্যালিফেটিক জৈব যৌগ বলা
হয় । অ্যালিফেটিক যৌগ সমূহ কার্বন শিকলে কার্বন পরমাণুর মধ্যে সিগমা বন্ধন ও পাই বন্ধন উপস্থিতি অনুসারে আবার দুই প্রকার হয়ে থাকে
ঃ ক ) সম্পৃক্ত জৈব যৌগ ও খ ) অসম্পৃক্ত জৈব যৌগ
ক ) সম্পৃক্ত জৈব যৌগঃ জৈব যৌগের কার্বনের কার্বন পরমাণু গুলি এক সিগমা বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে তাদেরকে সম্পৃক্ত জৈব যৌগ বলা হয়।
যেমনঃ ইথেন, ইথানল, প্রোপেন,প্রোপানল ।
খ ) অসম্পৃক্ত জৈব যৌগঃ যেসব জৈব যৌগের কার্বন শিকলে অন্তত দুটি কার্বন পরমাণু দ্বিবন্ধন বা ত্রিবন্ধন দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে তাদেরকে
অসম্পৃক্ত জৈব যৌগ বলা হয় । এদের আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় i) অ্যালকিন ও ii) অ্যালকাইন
i) অ্যালকিন : যে সব হাইড্রোকার্বনের মুক্ত কার্বন শিকলে কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাদেরকে অ্যালকিন বলে। অ্যালকিনের সাধারণ
সংকেতCnH2n। যেমন: ইথিন (C2H4),২-বিউটিন (CH3-CH=CH-CH3) ইত্যাদি।
ii)অ্যালকাইন : যে সব হাইড্রোকার্বনের মুক্ত কার্বন শিকলে একটি মাত্র কার্বন-কার্বন ত্রিবন্ধন থাকে তাদেরকে অ্যালকাইন বলে। অ্যালকাইনের
সাধারণ সংকেতCnH2n-2
খ)বদ্ধ শিকল বা বৃত্তস্থ বা বলয় গঠিত জৈব যৌগঃ যেসব জৈব যৌগের অণুতে কার্বন শিকলের দু'প্রান্তের কার্বন নিজেদের মধ্যে অথবা অপর ভিন্ন
পরমাণু যেমন নাইট্রোজেন অক্সিজেন সালফার ইত্যাদি পরমাণুর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কার্বন বলয় গঠন করে সেসব জৈব যৌগ কে বদ্ধ শিকল জৈব
যৌগ বলা হয় ।যেমন সাইক্লোপ্রোপেন বেনজিন ইথিলিন অক্সাইড থায়োফিন ইত্যাদি
বদ্ধ শিকল যৌগ সমূহ দুই প্রকার ১) কার্বোসাইক্লিক ও ২) হেটারোসাইক্লিক যৌগ
১)হোমোসাইক্লিক বা কার্বোসাইক্লিক যৌগঃ কার্বোসাইক্লিক যৌগের বলয়টি কেবল কার্বন পরমাণু দ্বারা গঠিত। কার্বোসাইক্লিক যৌগ সমূহ কে
আবার ধর্মের উপর ভিত্তি করে দুইউপ শ্রেণীতে ভাগ করা যায় i) অ্যালিসাইক্লিক ও ii) অ্যারোমেটিক যৌগ
i) অ্যালিসাইক্লিক যৌগঃযেসব জৈব যৌগ গঠনের দিক থেকে সাইক্লিক বা বলয় আকার কিন্তু ধর্মের দিক থেকে অ্যালিফেটিক বা মুক্ত শিকল
যৌগের মত তাদেরকে অ্যালিসাইক্লিক যৌগ বলে।যেমন সাইক্লোপ্রোপেন, সাইক্লোবিউটেন,সাইক্লোহেক্সেন ইত্যাদি
ii) অ্যারোমেটিক যৌগঃ বেনজিন জাতক ও এক বা একাধিক বেনজিন বলয় যুক্ত যৌগ বা বেনজিনের ধর্ম সদৃশ যৌগকে অ্যারোমেটিক যৌগ
বলে। যেমন বেনজিন ফেনাল ন্যাপথলিন ইত্যাদি
অ্যারোমেটিক যৌগ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় a)বেনজিন বলয় যুক্ত অ্যারোমেটিক যৌগ b) বেনজিন বলয় বিহীন অ্যারোমেটিক যৌগ
a)বেনজিন বলয় যুক্ত অ্যারোমেটিক যৌগঃ এ সমস্ত অ্যারোমেটিক যৌগে বেনজিন বলয় উপস্থিত।
b) বেনজিন বলয় বিহীন অ্যারোমেটিক যৌগঃ এসমস্ত অ্যারোমেটিক যৌগে বেনজিন বলয় উপস্থিত নয়
২)হেটারোসাইক্লিক যৌগ বা বিষম চাক্রিক যৌগঃযেসব বৃত্তাকার যৌগের বলয় গঠনে কার্বন পরমাণু সহ অপর হেটারো পরমাণু যেমন অক্সিজেন
সালফার নাইট্রোজেন প্রভৃ তির এক বা একাধিক পরমাণু অংশগ্রহণ করে সেসব যৌগ কে হেটারোসাইক্লিক যৌগ বলে। যেমন ইথিলিন অক্সাইড,
ফিউরান, থায়োফিন , পাইরোল পিরিডিন ইত্যাদি
হেটারোসাইক্লিক যৌগ কে আবার ধর্মের উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা যায় i)হেটারোসাইক্লিক ও ii) হেটারো অ্যারোমেটিক
i)হেটারোঅ্যালিসাইক্লিককার্বন বলয়ে শুধু একক বন্ধন থাকলে তাকে হেটারোসাইক্লিক যৌগ বলে।যেমনঃইথিলিন অক্সাইড
ii) হেটারো অ্যারোমেটিকঃকার্বন বলয় দ্বিবন্ধন থাকলে তাকে হেটারো অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। যেমন পিরিডিন ফিউরান থায়োফিন ইত্যাদি
কার্বনের চতু রযোজ্যতা: লাইভ ক্লাস
সিগমা ও পাই বন্ধনঃ লাইভ ক্লাস
কার্যকরী মূলক ঃ যে পরমাণু বা মূলক কোন জৈব যৌগের অণুতে বিদ্যমান থেকে কার্যত তার ধর্ম ও বিক্রিয়া নির্ধারণ করে তাকে ঐ যৌগের
কার্যকরী মূলক বলে ।
ক্যাটেনশন : একই মৌলের পরমাণুসমূহের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের শিকল গঠনের ধর্মকে ক্যাটেনশন বলা হয়।
সমগােত্রীয় শ্রেণি (Homologous): যে সকল যৌগের কার্যকরী মূলক একই হওয়ায় তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের গভীর মিল থাকে তারা
একই শ্রেণিভু ক্ত। এদেরকে সমগােত্রীয় শ্রেণি বলে। একই সমগােত্রীয় শ্রেণির সকল সদস্যকে একটি সাধারণ সংকেত দিয়ে প্রকাশ করা যায়। যেমন:
অ্যালকেন সমগােত্রীয় শ্রেণির সকল যৌগকে CnH2n+2সংকেত দিয়ে প্রকাশ করা যেতে পারে।
সমগোত্রীয় শ্রেণী
সাধারণ সংকেত
কার্যকরী মূলক
গাঠনিক সংকেত
অ্যালকেন
𝐶𝑛𝐻2𝑛+2
কার্বন কার্বন এক বন্ধন
লাইভ ক্লাস
অ্যালকিন
𝐶𝑛𝐻2𝑛
কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন
লাইভ ক্লাস
অ্যালকাইন
𝐶𝑛𝐻2𝑛−2
কার্বন কার্বন ত্রিবন্ধন
লাইভ ক্লাস
অ্যালকোহল
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-OH
অ্যালকোহল মূলক
লাইভ ক্লাস
হ্যালো অ্যালকেন
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-X
হ্যালাইড মূলক
লাইভ ক্লাস
অ্যামিন
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-𝑁𝐻2
অ্যামিনো মূলক
লাইভ ক্লাস
অ্যালডিহাইড
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-CHO
অ্যালডিহাইড মূলক
লাইভ ক্লাস
কিটোন
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-CO-𝐶𝑛𝐻2𝑛+1
কার্বনিল বা কিটো মূলক
লাইভ ক্লাস
কার্বক্সিলিক অ্যাসিড
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-COOH
কার্বক্সিল মূলক
লাইভ ক্লাস
এস্টার
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-COO-R
এস্টার মুলক
লাইভ ক্লাস
অ্যামাইড
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-𝐶𝑂𝑁𝐻2
অ্যামাইড মূলক
লাইভ ক্লাস
নাইট্রাইল
𝐶𝑛𝐻2𝑛+1-CN
নাইট্রাইল বা সায়ানাইড মুলক
লাইভ ক্লাস
নামকরণঃরসায়নবিদগণ এযাবত নিম্নোক্ত তিনটে পদ্ধতিতে জৈব যৌগের নামকরণ করেছেন। ১) সাধারণ বা প্রচলিত পদ্ধতি ২) উদ্ভূ ত বা
জাতক পদ্ধতি ৩) জেনেভা বা ইউপ্যাক পদ্ধতি
১) সাধারণ বা প্রচলিত পদ্ধতিঃ প্রাথমিক অবস্থায় জৈব যৌগের উৎস ধর্ম ব্যবহার ও আবিষ্কারকের ইচ্ছানুসারে আবিষ্কৃত যৌগের নামকরণ করা
ঁ ড়া(formica) থেকে প্রাপ্ত HCOOH এর নাম ফরমিক
হতো। যেমনঃ𝐶2𝐻6 গ্যাস সহজে জ্বলে (Greek aithen) বলে এর নাম ইথেন; লাল পিপ
অ্যাসিড; প্রসাব (urine) থেকে প্রাপ্ত 𝐻2𝑁𝐶𝑂𝑁𝐻2 এর নাম ইউরিয়া
অ্যালকেনের নামের পূর্বে পূর্বপদ রূপে(n-,iso-,neo-) এর ব্যবহারঃ অ্যালকিনের চেইন সমানু গুলোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক জেনেভা পদ্ধতিতে সরল
শিকল যৌগকে নরমাল(normal) যৌগ রূপে এর নামের পূর্বে n- যুক্ত করা হয়। যদি C শিকলের এক প্রান্তে তিনটি C পরমাণু যুক্ত(𝐶𝐻3) CH2
মূলক যুক্ত শাখা (isomeric) থাকে, তখন ঐ যৌগকে ”আইসো যৌগ” রূপে নামের পূর্বে iso যুক্ত করা হয়। আর যদি কোন C শিকলে একটি
চতু র্মাত্রিক অর্থাৎ চারটে কার্বন পরমাণু যুক্ত কোন কার্বন পরমাণু(neomar) থাকে,তবে ওই যৌগ কে নিও যৌগরূপে নামের পূর্বে neo নিযুক্ত
করা হয় ।যেমনঃ লাইভ ক্লাস
২) উদ্ভূ ত পদ্ধতিঃঅ্যালকেন সদস্য গুলোকে মিথেন এর জাতক রূপে এবং কে কার্বনিল ধরে এর কার্বন এর সাথে যুক্ত হাইড্রোজেন পরমাণুর
প্রতিস্থাপক এর নাম যুক্ত করে কার্বনিল গ্রুপে অ্যালকোহল এর নামকরণ করা হয়
৩)আধুনিক জেনেভা বা পদ্ধতিঃ সর্বপ্রথম 1892 সালে আন্তর্জ াতিক খ্যাতি নাম খ্যাতিমান রসায়নবিদ্যা সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে এক
সম্মেলনে জৈব যৌগের কার্যকরী মূলক ভিত্তিক নামকরণের যে কার্যকর বিধিমালা প্রণয়ন করেন তাকে জেনে বাবা পদ্ধতি বলে। বিভিন্ন জেনেভা
পদ্ধতিতে বিভিন্ন নিয়ম পরিবর্ত ন ও সংশোধন করা হয়। 993 সালের জেনেভা সর্বশেষ অ্যালিফেটিক যৌগের নাম এর সারসংক্ষেপ নিম্নরূপঃ
অ্যালিফেটিক যৌগের নামকরণ প্রধানত তিনটি পদ বা অংশ থাকেঃ১) উপপদ() ২) শব্দ মূল() ৩) পরপদ()
এ তিনটি পদের মধ্যে ‘ শব্দমূল’ প্রধান,যা নির্ধারিত দীর্ঘতম কার্বন শিকল এর মোট কার্বন পরমাণু সংখ্যার ওপর নির্ভ রশীল।দীর্ঘতম কার্বন
শিকলের কার্বন পরমাণুর সংখ্যা অনুসারে যুগের নামের শব্দমূল নির্ধারিত হয়। এ শব্দমূল পথের শেষে কার্বন শিকলের প্রকৃ তি অনুসারে অথবা
কার্যকরী মূলকের প্রকৃ তি অনুসারে পরপর যোগ হ... এরূপে মূল জৈব যৌগের নামকরণ বিক্রিত হয়। তারপর মূল জৈব যৌগের কার্বনের
হাইড্রোজেন পরমাণু অন্যকোন মুলকভা পরমাণু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে তাকে উপপদ হিসেবে মূল জৈব যৌগের নামের পূর্বে কার্বন শিকলে তার
অবস্থান নির্দে শ সংখ্যাসহ যোগ করা হয়
আলকেনঃ
হাইড্রোকার্বন
কার্বনের সংখ্যা-Cx
নামের প্রথম অংশ
নাম
CH4
C1 (1 টি কার্বন)
মিথ (-meth)
মিথেন
CH3-CH3
C2 (2 টি কার্বন)
ইথ (-eth)
ইথেন
CH3-CH2-CH3
C3 (3টি কার্বন)
প্রোপ (-prop)
প্রোপেন
CH3-(CH2)2-CH3
C4 (4 টি কার্বন)
বিউট (-but)
বিউটেন
CH3-(CH2)3-CH3
C5 ( 5 টি কার্বন)
পেন্ট (-pent)
পেন্টেন
CH3-(CH2)4-CH3
C6 (6 টি কার্বন)
হেক্স (-hex)
হেক্সেন
CH3-(CH2)5-CH3
C7 (7 টি কার্বন)
হেপ্ট (-hept)
হেপ্টেন
CH3-(CH2)6-CH3
C8 (8 টি কার্বন)
অক্ট (-oct)
অক্টেন
CH3-(CH2)7-CH3
C9 (9 টি কার্বন)
নন (-non)
ননেন
CH3-(CH2)8-CH3
C10 (10 টি কার্বন)
ডেক (-dec)
দেখেন
CH3-(CH2)9-CH3
C11 (11 টি কার্বন)
উনডেক (-undec)
CH3-(CH2)10-CH3
C12 (12 টি কার্বন)
ডোডেক (-dodec)
উনডেকেন
ডোডেকেন
অ্যালকাইলমূলক : অ্যালকেনের অণু হতে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু অপসারণ করলে যে অংশ অবশিষ্ট থাকে, তাকে অ্যালকাইলমূলক বলা হয়।
যেমন : -CH3 (মিথাইল মূলক), -C4H9 (বিউটাইল মূলক)
অ্যালকেনের নামকরণঃ
আলকেনঃ শুধুমাত্র কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত যৌগের কার্বন-কার্বন একক বন্ধন থাকলে তাদের সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বা অ্যালকেন
বলে। এদের সাধারণ সংকেত হলCnH2n+2 যেমন: মিথেন(CH4),বিউটেন(CH3-CH2-CH2-CH3) ইত্যাদি। এদের কার্বন শিকল সম্পৃক্ত থাকায়
এরা রাসায়নিকভাবে কম সক্রিয় তাই এদেরকে প্যারাফিন(‘ parumঅর্থa littleবা স্বল্প এবং affinisঅর্থaffinityবা আসক্তি’)বলা হয়।
অ্যালকেনের বৈশিষ্ট্য
অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত হলো CnH2n+2।
যেহেতু একক বন্ধনযুক্ত যৌগকে অ্যালকেন বলা হয় এর জন্য অ্যালকেনের কার্বন শিকলে প্রতিটি কার্বন পরমাণু sp³ সংকরিত।এরা মূলত
জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়।
অ্যালকেন শ্রেণির-1.C1-C4 যৌগ হলো গ্যাস , C5-C15 যৌগ হলো তরল ও C16 থেকে বাকি সব যৌগ হলো বর্ণহীন, গন্ধহীন মোমসদৃশ কঠিন
পদার্থ।
প্রস্তুতি ঃপরীক্ষাগারে-
সাধারণত কার্বোক্সিলিক এসিডের সোডিয়াম লবণের সাথে সোডালাইমের (NaOH+CaO) মিশ্রণকে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করে অ্যলকেন প্রস্তুত করা
হয়। একটু খেয়াল কর n কার্বন বিশিষ্ট আলকেন প্রস্তুতির জন্য n+1 কার্বন বিশিষ্ট ফ্যাটি এসিড লাগবে । অর্থাৎ 5 কার্বন বিশিষ্ট আলকেন
প্রস্তুতির জন্য 6 কার্বন বিশিষ্ট ফ্যাটি এসিড লাগবে
শিল্পক্ষেত্রে-
0
0
ii) কার্বন মনোক্সাইড ও স্টীমের মিশ্রণকে 250 -270 C তাপমাত্রায় নিকেল কার্বনেট প্রভাবকের ওপর দিয়ে চালনা করে মিথেনের শিল্পোৎপাদন
করা হয়।
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে H2 সংযোজন ঃ সম কার্বন বিশিষ্ট আলকেন পাওয়া যায় । আলকিন এ দুটি দ্বি বন্ধন থাকে । একটি সিগমা , একটি
পাই । পাই বন্ধন দুর্বল হউয়ায় একে সহজে আক্রমন করে বন্ধন ভেঙে দেয় এবং কার্বন এর সাথে যুক্ত হয় । আল্কাইন এ ও একই ঘটনা ঘটে
।এক্ষেত্রে দুটি পাই বন্ধন ভাঙ্গে এবং একটি কার্বন এ দুটি হাইড্রজেন যুক্ত হয়
১১২.৪ আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।
উর্ট জ বিক্রিয়া: শুষ্ক ইথারে দ্রবীভূ ত অ্যালকাইল হ্যালাইডের সাথে ধাতব সোডিয়ামের বিক্রিয়ায় অ্যালকেন উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়াকে উর্ট জ
বিক্রিয়া বলে। মিথেন তৈরি করা সম্ভব না
গ্রিগনার্ড বিকারক থেকে: গ্রিগনার্ড বিকারক (অ্যালকাইল ম্যাগনেসিয়াম হ্যালাইডকে গ্রিগনার্ড বিকারক বলে) ও পানির বিক্রিয়ায় অ্যালকেন
পাওয়া যায়।
কোব সংশ্লেষণ: কার্বোক্সিলিক এসিডের সোডিয়াম লবণের গাঢ় জলীয় দ্রবণকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে উচ্চতর অ্যালকেন উৎপন্ন হয়।
সূরা ইখলাস (অনুবাদ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
১১২.১ বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
১১২.২ আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
১১২.৩ তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
অ্যালকেনের বিক্রিয়াসুদঢ়ৃ একক সিগমা(σ)বন্ধনের কারণে অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয়। প্যারাফিন অর্থ রাসায়নিকভাবে আসক্তিহীন। তবে কিছু বিশেষ শর্তে
অ্যালকেন নিম্নোক্ত বিক্রিয়া দেয়অ্যালকেনের হ্যালোজেনেশনমৃদু সূর্যালোক বা অতিবেগুনি রশ্মির উপস্থিতিতে বা উচ্চ তাপমাত্রায় অ্যালকেনের হাইড্রোজেন পরমানু হ্যালোজেন(Cl2,Br2)দ্বারা প্রতিস্থাপিত
হয়। যেমন, সূর্যালোকের উপস্থিতিতে CH4ওCl2এর বিক্রিয়ায়
চারটি Hপরমাণু একে একে Clপরমাণু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে
মিথাইল ক্লোরাইড (CH3Cl),মিথিলিন
ক্লোরাইডCH2Cl2),ক্লোরোফরম(CHCl3), ও
মিথেনের
যথাক্রমে
কার্বন টেট্রাক্লোরাইড(CCl4)উৎপন্ন হয়।
অক্সিজেনের সাথে দহন বিক্রিয়া: মিথেন বায়ুর অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই-অক্সাইড জলীয় বাষ্প এবং তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। এই
তাপশক্তি রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।
অ্যালকেনের তাপীয় বিযোজন: উচ্চ চাপে ও তাপমাত্রায় তাপীয় ভাঙনে অথবা প্রভাবকের উপস্থিতিতে অপেক্ষাকৃ ত নিম্নতাপমাত্রায় প্রভাকীয়
ভাঙনে বৃহত্তর অ্যালকেন ভেঙে ক্ষু দ্রতর অ্যালকেন ও অ্যালকিনের মিশ্রণ উৎপন্ন হয়। বিযোজনের ফলে সৃষ্ট অণুর প্রকৃ তি নির্ভ র করে অ্যালকেন
অনুর আকৃ তি, তাপ, চাপ, প্রভাবক ইত্যাদির উপর। এ বিক্রিয়ার সাহায্যে বৃহত্তর অ্যালকেন থেকে ক্ষু দ্রতর অ্যালকেন প্রস্তুত করা যায়-
অ্যালকিন : যে সব হাইড্রোকার্বনে অন্তত একটি কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাদেরকে অ্যালকিন বলে। অ্যালকিনের সাধারণ সংকেতCnH2n।
যেমন: ইথিন (C2H4),২-বিউটিন (CH3-CH=CH-CH3) ইত্যাদি। অ্যালকেনের নিম্নতম সদস্য গুলো যেমন ইথিন, প্রোপিন, বিউটিন ইত্যাদি
হ্যালোজেন এর সাথে বিক্রিয়া করে তৈলাক্ত পদার্থ তৈরি ।তাই অ্যালকিনকে অনেক সময় অলিফিন( Olifin,greek:Olefiant=Oil forming)
বলে।
অ্যালকিনের প্রস্তুতি:
অ্যালকিনের নামকরণ: লাইভ ক্লাস
অ্যালকাইন থেকে : Pdএবং BaSO4এর উপস্থিতিতে H2দ্বারা ইথাইন কে বিজারিত করলে ইথিন উৎপন্ন হয়।
রাসূলল্ল
ু াহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন “মু’মিন ব্যক্তি সদয় ও ভদ্রস্বভাবের হয়ে থাকে আর পাপীষ্ট ব্যক্তি প্রতারক ও নীচ
প্রকৃ তির হয়ে থাকে।” বুখারী, আল- আদাবুল মুফরাদ, অনুচ্ছেদ: ১৯৭
অ্যালকিনের বিক্রিয়াঅ্যালকিনে অস্থায়ী দ্বিবন্ধন থাকায় এরা অত্যন্ত সক্রিয়। অ্যালকিনের বিক্রিয়া সমূহ দ্বিবন্ধনে ঘটে থাকে। এরা সংযোজন, জারন, ওজোনীকরণ,
পলিমারকরণ ইত্যাদি বিক্রিয়া দেয়।
HXসংযোজন:হাইড্রোজেন হ্যালাইডের এর সঙ্গে অ্যালকিনের যুত বিক্রিয়ায় অ্যালকাইল হ্যালাইড উৎপন্ন হয়।
জৈব যৌগের অসম্পৃক্ততা নির্ণয়:( গাঠনিক সংকেত সহ )
ব্রোমিন পানি পরীক্ষাঃ
ব্রোমিনকে জৈব দ্রাবকে বা পানিতে দ্রবীভূ ত করে লাল/বাদামি বর্ণের দ্রবণ প্রস্তুত করা হয়। সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্তহাইড্রোকার্বনের মধ্যে পৃকভাবে
কয়েকফোঁটা ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল/বাদামিবর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না
এবং দ্রবণের লাল/বাদামি বর্ণের কোনো পরিবর্ত ন হয় না।অপরদিকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন (অ্যালকিন বা অ্যালকাইন) লাল/বাদামি বর্ণের
ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায়অংশগ্রহণ করে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধনে অথবা ত্রি-বন্ধনে ব্রোমিন অণু যুক্ত হয়। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল/বাদামি
বর্ণবিনষ্ট হয়। বিক্রিয়ায় ব্রোমিন দ্রবণের বর্ণ পরিবর্ত ন পর্যবেক্ষণ করে সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্যকরা হয়।(ব্রোমিন
সংযোজন )
CH4+Br2=বিক্রিয়া হয় না ।
C2H4+Br2=BrCH2-CH2Br (বর্ণ পরিবর্ত ন হয়)
C2H2+Br2=Br2CH-CHBr2
(বর্ণ পরিবর্ত ন হয়)
অ্যালকিনের জারন বিক্রিয়া:( গাঠনিক সংকেত সহ ) অ্যালকিন ও ক্ষারীয় শীতল লঘু KMnO4এর জলীয় দ্রবণ এর জারণ বিক্রিয়ায় দ্বিবন্ধন এ
দুটি-OHমূলক যুক্ত হয়ে গ্লাইকল উৎপন্ন করে। এ বিক্রিয়ার ফলে KMnO4গোলাপী বর্ণ দূরীভু ত হয় বলে এ বিক্রিয়া দ্বারা অ্যালকিন শনাক্তকরণ
তথাদ্বিবন্ধনের উপস্থিতি নির্ণয় তথা জৈব যৌগের অসম্পৃক্ততা নির্নয় করা যায়।(জায়মান অক্সিজেন দ্বারা জারণ)
K2Cr2O7 + H2SO4= K2SO4+Cr2(SO4)3 +H2O+ [O]
অ্যালকাইন : যে সব হাইড্রোকার্বনের মুক্ত কার্বন শিকলে কমপক্ষে একটি কার্বন-কার্বন ত্রিবন্ধন থাকে তাদেরকে অ্যালকাইন বলে। অ্যালকাইনের
সাধারণ সংকেতCnH2n-2। যেমন:২-বিউটাইন (H3C−C≡C−CH3)
আল্লাহ বলেন, “অহংকারবশে তু মি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো
দাম্ভিক অহংকারীদের পছন্দ করেন না “ -(সুরা লোকমান : ১৮)।
পরীক্ষাগারে-
অ্যালকাইনের সক্রিয়তা2
অ্যালকিন পরমাণুর দ্বিবন্ধনে কার্বন পরমাণু দুটির প্রত্যেকটিsp -সংকরণ দ্বারা তিনটি সংকর অরবিটাল তৈরী করে। এসব সংকর অরবিটালে
33.3% s-চরিত্র ও 66.7% p-চরিত্র থাকে। অপরদিকে অ্যালকাইন পরমাণুর ত্রিবন্ধনে কার্বন পরমাণু দুটির প্রত্যেকটিsp-সংকরণ দ্বারা দুটি
সংকর অরবিটাল তৈরী করে। এসব সংকর অরবিটালে 50% s-চরিত্র এবং 50% p-চরিত্র থাকে। অ্যালকিনের ত্রিবন্ধনে s-চরিত্র বেশি হওয়ায়
কার্বন পরমাণুর দুটির নিউক্লিয়াসের σ ইলেকট্রণ মেঘ কাছাকা্ছি সরে আসে ফলে πইলেকট্রণ মেঘের ঘনত্ব ও বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ অ্যালকিনের
দ্বিবন্ধনের π-বন্ধনের চেয়ে অ্যালকাইনের ত্রিবন্ধনের π বন্ধন বেশি শক্তিশালী হয়। তাই রাসায়নিক ভাবে অ্যালকাইন অ্যালকিনের চেয়ে কম
সক্রিয় হয়।
অ্যালকোহল :
অ্যালকোহল প্রস্তুতি :
অ্যালডিহাইড : যে জৈব যৌগে অ্যালডিহাইড গ্রুপ (CHO-) বিদ্যমান থাকে তাকে অ্যালডিহাইড বলে। এদের সাধারন সংকেত CnH2n+1CHO
ফ্যাটি এসিড :
আল্লাহ্‌তালা বলেছেনঃ
"আর মানুষ তা-ই পায় যা সে করে। তার কাজের পরীক্ষা হবে, তারপর তাকে পুরো প্রতিদান দেওয়া হবে।" (সুরা নজম, আয়াত ৩৯-৪১)
“হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা বাকারা
২:১৫৩)
পেট্রোলিয়ামের উপাদানসমুহের পৃথকীকরণ :
******LIVE CLASS*******
জৈব
যৌগের
রূপান্তর ঃ
4.C2H4ও CH3COOH এর পারস্পরিক রূপান্তর কর
5.ইথিন ও অ্যালকোহল এর পারস্পরিক রূপান্তর লিখ
6.আলকেন = জৈব এসিড , আলকেন=আলকাইন=জৈব এসিড প্রস্তুতি লিখ
7.মিথেন ও ইথেন এর পারস্পরিক রূপান্তর
জৈব এসিড হতে আলকিন প্রস্তুতি ঃ জৈব এসিড কে শক্তিশালী বিজারক দ্বারা বিজারিত করলে প্রথমে অ্যালডিহাইড ও পরে অ্যালকোহল উৎপন্ন
হয়। উৎপন্ন অ্যালকোহলকে সালফিউরিক এসিড দ্বারা নিরুদিত করলে ইথিন উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে জৈব এসিডের বিজারণের জন্য শক্তিশালী
বিজারক LiAIH4 ব্যবহৃত হয়।
বিক্রিয়ার ক্রিয়া কৌশল একটু জটিল । এস এস সি লেভেল এ দরকার নাই । তবে লাইভ ক্লাস এ ডিটেল আলোচনা করব ইন-শাআল্লাহ ।
অনুরুপ ভাবে অ্যালকাইল হ্যালাইড কে বিজারিত করে আলকেন পাওয়া যায়
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নঃ
১। আলকেন আলকিন অপেক্ষা ভাল জ্বালানী ব্যাখ্যা কর
২।উন্নত দেশে পেট্রোল এর সাথে ইথানল মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় কেন
৩। ফেনল কে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা হয় কেন
৪। আলকেন অপেক্ষা আলকিন অধিক সক্রিও কেন
৫। বিউটেন একটি প্যারাফিন ব্যাখ্যা কর
৬। HCHO পানিতে দ্রবণীয় ব্যাখ্যা কর
৭। হাকেল তত্ত কি
৮। রেকটিফাইড স্পিরিট কি?
কিছু টপিক হয়ত বাদ পড়েছে । লাইভ ক্লাস এ সেগুলো কভার হবে ইন-শাআল্লাহ । ভু ল ত্রুটি ধরা পড়লে দয়াকরে জানাবেন । আমার
মোবাইল নং ০১৭৮০৯৪২৪৮৪ । জাযাকাল্লাহ খায়রান
স্পেশাল টিপস : প্রত্যেকটা বিক্রিয়া গাঠনিক সংকেত দিয়ে করার চেষ্টা করবে । আর বুঝে করবে
কৃ তজ্ঞতায়
১। মোঃ সামস জোবায়েদ (বি এল সঃ উঃ বিদ্যালয়, দশম শ্রেণি , রোল নংঃ ৩) 2020 batch
২। মুস্তাসিন রহমান ( আদর ) (বি এল সঃ উঃ বিদ্যালয়, দশম শ্রেণি , রোল নংঃ ২) 2020 batch
খোদা হাফেয
Download